ঢাকারবিবার , ২২ অক্টোবর ২০২৩

২৮ অক্টোবর ঘিরে উত্তাপ

প্রতিবেদক
Admin
অক্টোবর ২২, ২০২৩ ১০:৪০ পূর্বাহ্ণ

অনলাইন ডেস্ক ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও মাঠের বিরোধী দল বিএনপির পালটাপালটি মহাসমাবেশ ঘিরে ফের উত্তাপ ছড়াচ্ছে রাজনৈতিক অঙ্গনে।

২৮ অক্টোবর রাজধানী ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশের দিনে একই কর্মসূচি পালন করবে ক্ষমতাসীন দলও। ফাঁকা মাঠে বিএনপি নৈরাজ্য চালাতে পারে-এমন আশঙ্কায় জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়ে রাজপথে থাকবেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।

আন্দোলনের নামে রাজধানীতে কোনো অশান্তি সৃষ্টি করলে এর কড়া জবাব দিতে পাড়া-মহল্লার মোড়ে পাহারার পাশাপাশি গুলিস্তান এলাকায় মহাসমাবেশের পরিকল্পনা নিয়েছে দলটি। একই দিন প্রায় দুই কিলোমিটার দূরত্বে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশ সফলে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপিও।

ওইদিন ঢাকা শহরকে মিছিলের নগরীতে পরিণত করতে চায় দলটি। শান্তিপূর্ণ ওই মহাসমাবেশ থেকে সরকার পতনের একদফা দাবি আদায়ে লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণার কথা রয়েছে।

বড় দুদলের পালটাপালটি কর্মসূচি নিয়ে ফের রাজধানীবাসীর মনে তৈরি হয়েছে নানা শঙ্কা। এমন পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও নেওয়া হচ্ছে বাড়তি সতর্কতা।

মাঠ নিয়ন্ত্রণে একাধিক কর্মসূচি আ.লীগের
অবস্থানের পাশাপাশি মহাসমাবেশের মাধ্যমে বড় শোডাউনের প্রস্তুতি * অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে দিতে চায় না ক্ষমতাসীনরা

বিএনপির ‘মহাযাত্রা’ কর্মসূচি ঘিরে রাজপথে কোনো ছাড় দেবে না আওয়ামী লীগ। গত ১০ ডিসেম্বরের মতো ২৮ অক্টোবরও একাধিক কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে তারা। এদিন প্রতিটি থানা-ওয়ার্ডে সতর্ক অবস্থায় থাকবেন ক্ষমতাসীন দল ও তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

এর বাইরে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানো হবে সতর্ক পাহারা। প্রতিটি পাড়া-মহল্লার মোড়ে এবং গুরুত্বপূর্ণ সড়কে শামিয়ানা টাঙিয়ে সকাল থেকে অবস্থান নেবেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

এর সঙ্গে দলীয় সংসদ-সদস্য ও কাউন্সিলররাও তাদের অনুসারীদের নিয়ে মাঠে থাকবেন। রাজধানীজুড়ে এমন অবস্থানের পাশাপাশি এদিন মহাসমাবেশের মাধ্যমে বড় শোডাউন করবে দলটি। সব মিলিয়ে ২৮ অক্টোবর রাজনীতির মাঠ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকারি দল।

এদিকে কর্মসূচি ঘিরে কোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে দিতে চান না ক্ষমতাসীনরা। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে কঠোর মনোভাবের কথাও জানিয়েছেন তারা। পাশাপাশি বিএনপির গতিবিধি কী হবে, অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির কোনো পরিকল্পনা আছে কি না, সেদিকেও লক্ষ রাখছে আওয়ামী লীগ।

এর সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও কাজ করছে। কারও দিক থেকে সন্দেহজনক কোনো তৎপরতার তথ্য পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধেই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ রয়েছে বলে সূত্রগুলো জানায়।

এদিকে সরকার ও আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেও ইতোমধ্যে ২৮ অক্টোবরের আন্দোলন সম্পর্কে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস করলে ছেড়ে দেওয়া হবে না বলে শনিবার এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, এ ধরনের আলটিমেটামের তারিখ জাতি বহুদিন ধরেই শুনে আসছে। সুতরাং এই হুংকার বা আলটিমেটামে আমরা মোটেই বিচলতি নই। কারণ, আমরা মনে করি, বাংলাদেশের মানুষ গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচন আয়োজনকে স্বাগত জানায়। তবে তাদের হুমকির বিষয়ে আমরা সতর্ক ও সজাগ আছি। দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে তাদের মোকাবিলা করতে যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত আছে।

বিএনপির কর্মসূচি ঘিরে সংঘাতের আশঙ্কা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তো চাই, সংঘাতের আশঙ্কা না থাকুক। কিন্তু অতীতে আন্দোলনের নামে তাদের অগ্নি-সন্ত্রাস, মানুষ হত্যা, জ্বালাও-পোড়াও দেখেছি। ফলে এবার যেন এ ধরনের কিছু করতে না পরে, সে বিষয়ে আমরা সতর্ক আছি এবং থাকব।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল বলেন, যারা দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান অতীতেও ছিল, আগামী দিনেও থাকবে। আমরা সতর্ক থাকব যাতে কেউ কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে।

এদিকে ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বড় সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগও। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আয়োজনে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এ সমাবেশ সফল করতে ইতোমধ্যে একাধিক সভা করেছে উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ।

এতদিন ২৩ বঙ্গবন্ধু বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগ। তবে এবার পল্টন মোড় থেকে গোলাপ শাহ মাজার পর্যন্ত সড়কে এই সমাবেশ করার চিন্তা করছে দলটি। তবে সমাবেশের স্থান এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান বলেন, ২৮ অক্টোবর ঘিরে পুরো প্রস্তুতি আমরা নিচ্ছি। রোববার (আজ) আমাদের তিনটা সভা আছে। প্রথমে বেলা আড়াইটায় আমাদের ওয়ার্ড কমিটিগুলো নিয়ে সভা হবে। বিকাল সাড়ে ৩টায় থানা-ওয়ার্ডের নেতা ও দলীয় কাউন্সিলরদের নিয়ে বর্ধিত সভা করব। এছাড়া সাড়ে ৫টায় ঢাকা উত্তরের আট সংসদ-সদস্যকে নিয়ে বৈঠক করব। এ সভাগুলোয় আমাদের কেন্দ্রীয় নেতারাও থাকবেন।

এছাড়া ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি সভা ডেকেছে। এতে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত থাকবেন। একই সঙ্গে ঢাকার আশপাশের জেলা ও উপজেলার নেতা ও দলীয় সংসদ-সদস্যরাও এতে উপস্থিত থাকবেন।

ওই বৈঠকেও অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে ২৮ অক্টোবরের কর্মসূচি ও করণীয় নিয়েও আলোচনা হবে বলেও জানান শেখ বজলুর রহমান।

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি যুগান্তরকে বলেন, তারা দেশের গণতন্ত্র ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ধ্বংস করতে চাইলে তো আমরা বসে থাকব না। দেশ ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যে কোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আমরা সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছি। কথা পরিষ্কার-আমরা বসে থাকব না। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা লাখ লাখ সাধারণ মানুষ নিয়ে রাজপথে সতর্ক থাকবে।

এদিকে ২৮ অক্টোবরের কর্মসূচি সামনে রেখে প্রস্তুতি শুরু করেছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগও।

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির যুগান্তরকে বলেন, ‘২৬ অক্টোবর মায়া ভাই (আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম) মিটিং ডেকেছেন। সেখানে ২৮ অক্টোবরের কর্মসূচি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।’

তিনি আরও বলেন, আমি আবারও বলছি, আমরা কারও কর্মসূচিতে বাধা দেব না। কিন্তু কর্মসূচির নামে কেউ অরাজকতা করতে চাইলে, পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে চাইলে তাদের প্রতিহত করা হবে। এ বিষয়ে আমাদের তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছেও দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের পাশাপাশি নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে দলটির সহযোগী সংগঠনগুলোও।

জানতে চাইলে স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু বলেন, গণতান্ত্রিক দল হিসাবে আওয়ামী লীগের অনেক দায়িত্ব আছে। কেউ যেন আন্দোলনের নামে দেশের মানুষের জানমালের ক্ষতি করতে না পারে, সে বিষয়ে আমরা সতর্ক থাকব এবং শান্তিপূর্ণ অবস্থান করব। আমাদের প্রতিটি থানা-ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

একই বিষয়ে যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল যুগান্তরকে বলেন, বিএনপি ধ্বংস করার চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। সামনে নির্বাচন। তারা নানাভাবে নাশকতা করার চেষ্টা করবে। ফলে আমরা এদের এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে এবং সব সময় আমরা সাধারণ মানুষের পাশে আছি।

এদিকে ২৮ অক্টোবরের কর্মসূচি ঘিরে বিএনপি ঢাকার বাইরে থেকে লোক আনা এবং ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ অফিস ঘেরাও করতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে আওয়ামী লীগে।

এ বিষয়ে দলটির এক নেতা যুগান্তরকে জানান, বিএনপি এখন চাইছে যে কোনোভাবে নির্বাচন পণ্ড করতে। সে লক্ষ্যে তারা একদিকে কর্মসূচি দিচ্ছে, অন্যদিকে আবার ঢাকার বাইরে থেকেও লোকজন নিয়ে আসছে। এটা করে তারা নির্বাচন কমিশনসহ নানা সরকারি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ঘেরাও করে হামলা ও অরাজকতা করতে চায়। এ বিষয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিট নেতাদের সার্বিক পরিস্থিতি মনিটরিংয়ের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঢাকায় মেস বা বাসাবাড়িতে বহিরাগত, অপরিচিত ও সন্দেহজনক লোকদের দেখলে পুলিশে খবর দিতেও বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ঢাকায় বড় জমায়েতের প্রস্তুতি বিএনপির
লাগাতার কর্মসূচির চিন্তা; বেশিরভাগ ঢাকাকেন্দ্রিক, থাকবে জেলা-মহানগরেও * সরকার কঠোর হলে ঘেরাও-অবরোধ আসতে পারে

সরকার পতনের একদফা দাবি আদায়ে সরকারকে কোনো ছাড় দেবে না বিএনপি। দলীয় নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করতে হাইকমান্ডের বার্তা নিয়ে ইতোমধ্যে তৃণমূল সফর করছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। সেখানে দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক থেকে কর্মসূচি সফলের পাশাপাশি গ্রেফতার এড়াতে নানা দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।

এছাড়া চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণার দিনও তৃণমূল নেতাকর্মীদের পাশে চায় দলটি। এজন্য আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকার মহাসমাবেশে বড় ধরনের জমায়েতের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। কর্মসূচি সফলে আজ দুপুরে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথসভা ডাকা হয়েছে। অতীতের মতোই এ সমাবেশ সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ হবে বলে জানিয়েছেন নেতারা।

এ থেকে লাগাতার কর্মসূচি দেওয়ার চিন্তা করছে। যার বেশিরভাগ হবে ঢাকাকেন্দ্রিক। তবে জেলা ও মহানগরে কর্মসূচি থাকবে। সরকার কঠোর হলে ঘেরাও ও অবরোধের মতো কর্মসূচি আসতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা গেছে এসব তথ্য।

মহাসমাবেশ সফল ও পরবর্তী কর্মসূচি চূড়ান্ত করতে গুলশান কার্যালয়ে দফায় দফায় বৈঠক করছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা। নেতাকর্মীদের বাধা, মামলা ও গ্রেফতার করলে তাৎক্ষণিকভাবে যাতে কেন্দ্রে তথ্য পাঠাতে পারে এজন্য একটি সেলও গঠন করেছে দলটি।

নেতারা মনে করছেন, ঢাকাকেন্দ্রিক আন্দোলন হলে সেটি নিয়ন্ত্রণে ক্ষমতাসীনরা সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগের সুযোগ পাবে। এ কারণে আন্দোলনের পরিধি তারা তৃণমূল পর্যন্ত নিতে চায়। ঢাকাকেন্দ্রিক দু-তিন রকমের কর্মসূচি থাকতে পারে। এর মধ্যে নির্বাচন কমিশন, সচিবালয়সহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান অভিমুখে ‘পদযাত্রা’ বা ‘ঘেরাও’ কর্মসূচি দেওয়া হতে পারে।

অথবা রাজধানীর উত্তর ও দক্ষিণের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পদযাত্রার কর্মসূচি  দেওয়া হতে পারে। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সরকারের পক্ষ থেকে বাধা এলে সড়ক, নৌ ও রেলপথ অবরোধের চিন্তাও আছে বিএনপির। আবার দলটি আশঙ্কা করছে, আগামী দিনে তাদের সিনিয়র অনেক নেতা গ্রেফতার হতে পারেন।
সেক্ষেত্রে আন্দোলন কীভাবে এগোবে, তা-ও ভেবে রেখেছে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। অতীত আন্দোলনের অভিজ্ঞতা থেকে এবার ভিন্ন কৌশলে আন্দোলনের রোডম্যাপ সাজাচ্ছে হাইকমান্ড। যেখানে মধ্যম সারির নেতারা সামনে থেকে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেবেন।

গত এক মাসে ৬৪ জেলায় দায়িত্বশীল নেতাদের পাঠিয়ে দলের অবস্থান, দুর্বলতা, গ্রুপিংসহ বেশ কিছু তথ্য সংগ্রহ করেছে দলটির হাইকমান্ড, যা ইতোমধ্যে সমাধান করা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘সরকার পতনের একদফা আন্দোলনে মরণপণ লড়াইয়ের জন্য নেতাকর্মীরা প্রস্তুতি নিয়েছে। আর এটা (আন্দোলন) ক্ষমতার লড়াই না, দেশটাকে বাঁচানোর লড়াই, মানুষের মুক্তির লড়াই। এ ধরনের স্বৈরাচারী সরকার কী কী করতে পারে আমরা জানি। তাদের শেষ ভরসা হচ্ছে গ্রেফতার, সাজা। এখন শক্তি দিয়ে বাঁচার চেষ্টাই তো আমাদের একমাত্র পথ। এছাড়া তো আর কোনো উপায় নেই। কিন্তু কত লোককে তারা গ্রেফতার করবে। গ্রেফতার করেও যে তারা টিকবে, সে সুযোগ তো দেখছি না। সুতরাং এসব করেও এবার সরকারের শেষ রক্ষা হবে না।’

বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্বারের জন্য আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে আসছি। ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশও শান্তিপূর্ণ হবে এবং ব্যাপক জনসমাগম হবে। সাধারণ জনগণও এতে অংশ নেবে। কর্মসূচিও আসতে পারে।
ইতোমধ্যে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে ডিএমপিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আশা করি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সমাবেশের বিষয়ে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করবে। একই সঙ্গে প্রত্যাশা করব, জনগণের দাবি মেনে নিয়ে সরকার পদত্যাগ করবে এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেবে।’ বিএনপির একাধিক নীতিনির্ধারক জানান, এই মুহূর্তে মূল দৃষ্টি ঢাকার মহাসমাবেশ বাস্তবায়নের দিকে। তাদের লক্ষ্য রাজধানী ঢাকায় গত ২৮ জুলাইয়ের চেয়েও বড় মহাসমাবেশ করা। সে লক্ষ্যে মহাসমাবেশের আগে কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো কর্মসূচি রাখা হয়নি। লম্বা বিরতি দিয়েই মহাসমাবেশের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

তারা আরও জানান, অতীতের মতো শান্তিপূর্ণভাবে নয়াপল্টনেই মহাসমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতাদের বক্তব্যে মনে হয়েছে, মহাসমাবেশের স্থান নিয়ে সরকার ঝামেলা করতে পারে। দলের সিনিয়র নেতাসহ কর্মীদের গ্রেফতারও করা হতে পারে। সব ধরনের শঙ্কা মাথায় রেখেই চূড়ান্ত আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এমনকি বিকল্প প্রস্তুতিও নেওয়া আছে।

নয় দিন কোনো কেন্দ্রীয় কর্মসূচি না রেখে ২৮ অক্টোবর সমাসমাবেশ করার বিষয়ে দায়িত্বশীল নেতারা জানান, ‘বেশ কিছু কারণ রয়েছে। নিরপেক্ষ সরকার ইস্যুতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও গণতান্ত্রিক বিশ্বসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে শেষবারের মতো একটা বার্তা দেওয়া। সরকারকে বার্তা দেওয়া হয়েছে-চাইলে তারা এ সময়ের মধ্যে প্রকাশ্যে অথবা পর্দার আড়ালে নিরপেক্ষ সরকার ইস্যুতে আলোচনা করতে পারে। আবার আন্তর্জাতিক বিশ্বকে বোঝানোর চেষ্টা চলছে যে, আমরা সব চেষ্টা করেছি; বাধ্য হয়ে চূড়ান্ত আন্দোলনের পথে হাঁটতে বাধ্য হয়েছি। এখানে আমাদের কিছু করার ছিল না।’

মহাসমাবেশসহ আগামী দিনের কর্মসূচি সফলে তৃণমূলকে হাইকমান্ডের বার্তা দিতে জেলা সফর করছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

সূত্রমতে, ঢাকার বাইরে কী ধরনের কর্মসূচি হতে পারে বা কোনো ধরনের কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলন শুরু হবে, তা নিয়ে বিভিন্ন প্রস্তাব থাকলেও এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি দলটি। তবে বিশেষ কিছু কর্মসূচি মাথায় রেখে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা জেলার সব পর্যায়ের নেতাকর্র্মীদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছেন। আন্দোলনে কোন নেতার কী ভূমিকা থাকবে, সে ব্যাপারেও তাদের দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে বিএনপির চূড়ান্ত ধাপের আন্দোলনের সঙ্গে কঠোর কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল নেতৃত্বাধীন ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্রঐক্য। তাদের মূল লক্ষ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক আন্দোলন গড়ে তোলা। এর অংশ হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বটতলায় ‘ছাত্র সমাবেশ’ করার পরিকল্পনা রয়েছে। যদিও দিনক্ষণ এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

সর্বশেষ - অপরাধ

আপনার জন্য নির্বাচিত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে দীঘিনালা উপজেলা আ’লীগের বিক্ষোভ মিছিল 

লকডাউনে সিন্দুকছড়িতে সেনা জোনের বিশেষ মানবিক সহায়তায় প্রদান

নতুন ভবনের উদ্বোধন! কল্যাণ ফান্ডের অর্থ পেল সংগঠনের মৃত ৩ সদস্যের পরিবার

বাঘাইছড়িতে বন্যাদূর্গত পরিবারের মাঝে বিজিবির খাদ্য ও ঔষধ বিতরন

শোকাবহ আগষ্ট উপলক্ষে বিলাইছড়িতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে মোমবাতি প্রজ্জ্বোলন

খাগড়াছড়িতে বিএনপির সংবাদ সম্মেলন! ইফতারে বাঁধা দিলেই দুই দিনের সড়ক অবরোধ

সাজেকে ডায়রিয়া আক্রান্তদের মাঝে ৫৪বিজিবি’র বাঘাইহাট ব্যাটালিয়নের চিকিৎসা সেবা প্রদান

দীঘিনালায় ৩মাস বেতন নেই ২৮৫ পাড়াকর্মীর 

দীঘিনালায় ৬শতাধিক কৃষকের মাঝে  কৃষি প্রনোদনার বীজ ও সার বিতরণ 

খাগড়াছড়িতে লকডাউন নির্দেশনা বাস্তবায়নে সেনাবাহিনী,বিজিবি,পুলিশ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট’র টহল